সিলেট সিটি করপোরেশনকে সামনে রেখে ভিন্ন ফরমেটে শোডাউন দিলেন সিলেটের মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। মহান মে দিবসে তিনি অনুসারীদের নিয়ে সিলেটে এই শোডাউন দেন। তবে- সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিনি অনেক কথাই বলে দিলেন। তার এই বক্তব্যকে ঘিরে আলোচনায় সরব সব মহল। আকার-ইঙ্গিতে বলে দেওয়া বক্তব্যকে ঘিরে বিশ্লেষণও চলছে বিভিন্ন মহলে। মাত্র ৫ মিনিটের এই বক্তব্যে আরিফ অনেক কথাই বলে দিলেন।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে মেয়র আরিফ স্পষ্ট না করলেও বলে দিয়েছেন ২০ শে মে সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী ময়দানে সিলেট নগরবাসী ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিয়ে বসবেন। আর ওই বৈঠকে তিনি সবার সঙ্গে আলোচনা করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।
শোডাউনের পূর্বে রেজিস্ট্রারী মাঠে বক্তৃতাকালে মেয়র আরিফ জানান- ‘আজ অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে; সিলেটের সব রাজনৈতিক দল সিলেটকে যেনো এমন একটি অবস্থায় নিয়ে গেছেন; সিলেটে যেনো কোনো মানুষ নেই। সিলেটে যেনো কোনো নেতৃত্ব নেই। আমাদেরকে সবক দেওয়ার জন্য বাইরে থেকে এনে আমাদেরকে নেতৃত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা পরিহার করি।
সিলেটের মানুষ নেতৃত্ব দিতে পারবে। এই মাটির সন্তানেরাই যথেষ্ট।’
মেয়র আরিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন- ‘বাইরে থেকে এসে কেউ নেতৃত্ব দিয়ে আমাদেরকে দাস বানাতে পারবে না। আমরা কারো দাস হতে চাই না। আমাদেরকে রক্তচক্ষু দিয়ে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। কর্তৃপক্ষ যা-ই থাকেন না কেনো আমরা বলতে চাই- মানুষ ফুঁসে উঠেছে। আমাদের প্রতিবাদের জন্য আহবান করলে আমাদের মা, বোনরা নেমে আসবেন। আপনারা ঠেকাতে পারবেন না।’
তিনি বলেন- ‘আমরা মনে করি; সকল রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে যারা এই সিলেটের মাটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, যারা দীর্ঘ দিন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে বাদ দিয়ে হায়ারি কাউকে দিয়ে, হায়ার করে বাইরে থেকে এনে, বিভিন্ন জেলার নেতাদেরকে নিয়ে, বিভিন্ন এলাকার নেতাদেরকে দিয়ে আমাদেরকে নেতৃত্ব দেবেন। আমরা কী সবাই দাসখতে দস্তগত দিয়েছি। আমাদেরকে কী আপনাদের প্রজাসত্ব আইনের মতো ব্যবহার করবেন। তা হতে পারে না। সিলেটের মানুষ জেগে উঠেছে।’
মেয়র বলেন- ‘দশটি বছর আমি জনগনের সেবা দিয়ে আসছি। যারা আমাকে এই দশ বছরে সহযোগিতা করেছেন। তাদের কাছে আমি চির ঋনী। আমার এলাকার মুরব্বিয়ান ও মানুষকে সামনে রেখে আগামী ২০ তারিখ আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করবো।’ মেয়র আরিফ প্রশ্ন রেখে বলেন- ‘বিএনপি কাদের জন্য আন্দোলন করছে। এদেশের জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করছে। আপনাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করছে। আপনার ভোট আপনে দেবে, যাকে খুশি তাকে দিবেন। নীল নকশার নির্বাচন মানি না, মানবো না।’ মেয়র আরিফ তার বক্তৃতায় দেশ বিভক্তির সময়, ১৯৭১ সালে সিলেটবাসীর অবদানের কথা তুলেন। তিনি সিলেটের মাটিকে ওলি আউলিয়ার মাটি বলে আখ্যায়িত করে বলেন- ‘যারা এ মাটির মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে আল্লাহ তাদের ছাড়বে না। অতীতেও কেউ পার পায়নি, ভবিষ্যতে কেউ পাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।’