আওয়ামী লীগ সরকারকে ফের ক্ষমতায় বসানোর অপকৌশল হিসেবেই নির্বাচন কমিশন ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। সংগঠনের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিলেও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের মতামতকে আমলে নেয়া হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে মতামত নেয়ার পর তাদেরকে আশ্বস্ত করে এখন ধোঁকা দিচ্ছে ইসি।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষা যে কোন জাতির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ চর্চার কথা নতুন শিক্ষাক্রমে বারবার উল্লেখ করা হলেও ইসলাম শিক্ষাকে সামষ্টিক মূল্যায়নে ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান ও বানিজ্য বিভাগ থেকে বাদ দিয়ে মানবিক বিভাগে ঐচ্ছিক রেখে কৌশলে সংকুচিত করা হয়েছে। যার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নীতি নৈতিকতাহীন, দূর্নীতিগ্রস্থ প্রজন্ম হিসেবে গড়ে ওঠার দ্বার উন্মোচিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চর্চা করছে। ছাত্র রাজনীতির নামে চলমান মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের প্রচলিত সংস্কৃতির বাহিরে নৈতিকতা সমৃদ্ধ মেধাবী প্রজন্ম তৈরিতে কাজ করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম বলেন, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করলেও এখনো আমরা শিক্ষার সংকট থেকে বের হতে পারিনি। বিজ্ঞানভিত্তিক, কর্মমূখী ও সর্বজনীন ইসলামী শিক্ষার কাঠামো প্রণয়নের জন্য আমাদেরকে রাজপথে নামতে হচ্ছে। যেখানে দেশের শিক্ষিত কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে সরকারগুলো বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, সেখানে কারিগরি শিক্ষার সংকোচন নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবী ও আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন এর সঞ্চালনায় আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ থেকে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম সংস্কার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দু’দিন ছুটির বিষয়টি পুণঃর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আব্দুল কাইউম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেছার উদ্দিন।