সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

যোগদানের ছয় মাসেই পাল্টে দিয়েছেন শেরপুর জেলার চিত্র

Date:

স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুরে যোগদানের ছয় মাসেই পাল্টে দিয়েছেন জেলা চিত্র জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ। তাঁর আন্তরিক, দক্ষ ও চৌকস নেতৃত্বে জনসেবা প্রদানে, শেরপুর জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও মানব সম্পদ উন্নয়নে ইতোমধ্যে প্রশংসনীয় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্ব যেন এক সুতোয় গেঁথেছে শেরপুরবাসীকে। সবশেষ ডিসি সম্মেলনে শেরপুরবাসীর প্রাণের দাবী রেল লাইন স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট যোক্তিক দাবী উপস্থাপনের ফলে শেরপুরবাসী ডিসি মোমিনুর রশীদকে বেশ আপন করে নিয়েছেন। জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়াবিদ, ব্যবসায়িক, সাংবাদিকবৃন্দসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের উদ্দেশ্য যেন একটাই-পিছিয়ে পড়া সকল মানুষের জীবনমান এবং শেরপুর জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
জেলায় যোগদানের পর থেকেই তার দপ্তর থেকে জনসেবা প্রদান কার্যক্রম সহজীকরণ শুরু করেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পরই তৃণমূলের সাধারণ মানুষসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য তার সেবাদ্বার সকল সময়ের জন্য উন্মুক্ত করেছেন। কার্যালয়ে আগত সকলের কথা তাৎক্ষণিক শুনে দ্রুত সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে সাধারণ মানুষের সাথে তার আত্নীক সম্পর্ক তৈরী হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের অসহায় মানুষজন। তার নিজস্ব উদ্যোগে এ জেলায় ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমিসেবা সহজীকরণ করা হয়েছে। ই-পর্চা সফটওয়্যারে রেকর্ডীয় খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রি করে এ জেলার রেকর্ডরুম ডিজিটাল করা হয়েছে। জেলার ওয়েব পোর্টালে সকল অর্পিত সম্পত্তির তথ্য, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা, দেওয়ানী ও ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যাল এ চলমান মামলার তথ্য, তার মাসিক কার্যক্রম, আদালত ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ওয়েব পোর্টাল আধুনিকায়নের ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার বিভিন্ন তথ্য ও সেবা পূর্বের চেয়ে অনেক কম সময়ে পাওয়া যাচ্ছে।
তার সুদক্ষ দিক নির্দেশনায় তিনি শেরপুরবাসীকে ৫২ টি ইউনিয়নে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। তার চৌকস দিক নির্দেশনায় জেলা প্রথমবারের মত অনলাইন ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জেলায় প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অনলাইন উদ্যোক্তাদের ডাটাবেইজ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো: মোমিনুর রশীদ। পর্যটনের আনন্দে, তুলশীমালার সুগন্ধে-শেরপুর। এই স্লোগানে পর্যটনকে উপজীব্য করে ব্র্যান্ডিং হচ্ছে শেরপুর জেলা। শেরপুর জেলা ব্র্যান্ডিং করতে ইতোমধ্যে তিনি ব্র্যান্ডিং লগো সম্বলিত ব্যাগ, মগ, ক্যালেন্ডার, ফোল্ডার, খাতা ও কলমের ব্যবহার শুরু করেছেন। এছাড়া তার উদ্যোগে স্থানীয় হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পরিবহনে ব্র্যান্ডিং লগোর ব্যবহার শুরু হয়েছে। শেরপুরকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপনের জন্য জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, পর্যটন কেন্দ্র, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিয়ে স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র নির্মাণ ও জেলার ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রদর্শন ও প্রচারের ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
শেরপুরের পর্যটন বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো: মোমিনুর রশীদ। তিনি জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গজনী অবকাশকে ঢেলে সাজানো শুরু করেছেন। তার উদ্যোগে ময়মনসিংহ বিভাগে প্রথম জিপ লাইনিং, ক্যাবল কার ও দীর্ঘতম ঝুলন্ত ব্রিজ নির্মিত হয়েছে গজনী অবকাশে, ফলশ্রুতিতে গজনীতে ইতিমধ্যে দর্শনার্থী অতীতের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে, যা এ এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া আগত দর্শনার্থীদের শেরপুরের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনমান ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানাতে কালচারাল একাডেমী স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। একইসাথে রেস্ট হাউজের আধুনিকায়ন, রাইড সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন স্থাপনা নতুন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
শেরপুর সাংস্কৃতিক পরিবারের আহবায়ক ইউসুফ আলী রবিন বলেন, “আমাদের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বিগত ছয় মাসের যে কর্মচঞ্চণ্যতা, কাজের প্রতি আগ্রহ ও স্পৃহা, তা অন্য কোন জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা পাইনি। শেরপুর জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি মানিক দত্ত বলেন, “শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ মহোদয় ক্রিড়াঙ্গনের একটি প্রাণ। শুধু তিনি নন, তার সহধর্মিনীও শেরপুরের ক্রিড়াঙ্গনের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ। সেই সাথে আমাদের ডিসি ভাবীর ক্রিড়া নিয়ে আগ্রহের কারণে বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতা আয়োজন ও নারী খেলোয়াড়দের জন্য বিভিন্ন সুযোগ আমাদের শেরপুরবাসীর জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ।” শেরপুর জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাসরিন বেগম ফাতেমা বলেন, শুধু ডিসি স্যার নন, ডিসি ভাবীর সহযোগিতা আমাদের নারীদের যেকোন কাজকে আরো গতিশীল করছে। শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া বলেন, “বর্তমান জেলা প্রশাসক অত্যন্ত যোগ্য, বন্ধুবৎসল, অমায়িক এবং নিরঅহংকারী মানুষ। যেকোন সমস্যা সমাধানে তিনি শতভাগ উদ্যোগী ও সহায়ক।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো বলেন, “শেরপুরবাসী একজন খোলামেলা মনের ডিসি পেয়েছি। শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান বলেন, “আমাদের বর্তমান জেলা প্রশাসক মাত্র সাত মাসেই সবার মন জয় করেছেন। একজন গণমাধ্যকর্মীবান্ধব ডিসি তিনি। গজনী অবকাশে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য শেরপুরবাসী উপকৃত হচ্ছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান বলেন, “বর্তমান জেলা প্রশাসক একজন জনবান্ধব জেলা প্রশাসক, অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। তার আতিথিয়তায় শেরপুরবাসী মুগ্ধ।
জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, আমি পরিকল্পনায় নয়, চর্চায় বিশ্বাসী; আমি জানি, ভবিষ্যত অনিশ্চিত। তাই আমাকে যে দায়িত্ব দিয়ে শেরপুরে পাঠানো হয়েছে তার সর্বোচ্চ সফলতা ও অগ্রগতি আমার অর্জন করতে হবে, এটা লক্ষ স্থির করেই আমি প্রথম দিন থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন “শুধু গতানুগতিক দায়িত্ব পালন নয়, বরং গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পর্যটনসমৃদ্ধ শেরপুর উন্নত জেলায় পরিণত করাই আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। যোগদানের পর থেকে কতটুকু ভালোবাসা, সম্মান আর কাজ দিতে পেরেছি, তার মূল্যায়ন শেরপুরবাসীই করবে।”

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Share post:

Popular

More like this
Related

হাতি হত্যায় ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

  শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে হাতির মৃত্যুকে...

শাকিব খানের বিরুদ্ধে সমন জারি

মানহানির অভিযোগে ঢাকাই সিনেমার নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে ১০০...

জ্যোতি ঝড়ে ৯ বছর পর শ্রীলঙ্কাকে হারালো বাংলাদেশ

শেষ ৮ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৮...

তীব্র কয়লা সঙ্কটে বড় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র, লোডশেডিং বাড়ার সম্ভাবনা

ডলারের অভাবে তীব্র কয়লা সঙ্কটে পড়েছে দেশের বড় দুটি...