ফেনী জেলায় প্রাথমিকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার কমতে শুরু করেছে। করোনাকালে শিশুরা স্কুলমুখী না হলেও বর্তমান সময়ে এর চিত্র উল্টো।
২০২১ সালে ঝরে পড়ার হার ২ শতাংশের বেশি থাকলেও চলতি বছর সেটির পরিমাণ ১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা আর অভিভাবকদের সচেতনতায় শিশুদের স্কুলমুখী হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলায় সরকারি ৫শ ৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে চলতি বছর ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩৮ শিশু ভর্তি হয়। বছরের শুরুতে মোট শিক্ষার্থীর ভর্তির মধ্যে ঝরে পড়েছে ৩শ ৪৭ জন। শতকরা হিসেবে এই হার ০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। কোথাও ভর্তি হয়নি এমন শিশুর সংখ্যা রয়েছে ৮শ ৮৪ জন। এর আগে ২০২১ সালে করোনাকালে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪২৫ জন শিশু ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ঝরে পড়ার সংখ্যা হচ্ছে ৯শ ৪০ জন। শতকরা হার ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। কোথাও ভর্তি হয়নি এমন শিশুর সংখ্যা রয়েছে ১ হাজার ৫শ ২১ জন।
চলতি বছরের পরিসংখ্যান মতে, উপজেলা পর্যায়ে এই হার সোনাগাজীতে বেশি। উপজেলায় ৬শ ৩৭ জন শিশু কোথাও ভর্তি হয়নি। ২৯ হাজার ২শ ৬৮ জন শিশু ভর্তি হওয়ার পর ৩৮ জন করে পড়েছে। ভর্তি উপযোগী শিশু রয়েছে ২৯ হাজার ১শ ৫ জন। এছাড়া সদর উপজেলায় ৭৭ হাজার ২শ ১৬ জন ভর্তি উপযোগি শিশু থাকলেও ভর্তি হয়েছে ৭৭ হাজার ৪৩ জন। ঝরে পড়েছে ২৭১ জন।
দাগনভূঞা উপজেলায় ২৮ হাজার ৮শ ৩ জন ভর্তি উপযোগি শিশু থাকলেও ভর্তি হয়েছে ২৮ হাজার ৬শ ৭৬ জন। ঝরে পড়েছে ১২ জন। ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২২ হাজার ৩শ ৫৭ জন ভর্তি উপযোগি শিশু থাকলেও ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৩শ ১৪ জন। ঝরে পড়েছে ২ জন। পরশুরাম উপজেলায় ১৩ হাজার ৮শ ৪৪ জন ভর্তি উপযোগি শিশু থাকলেও ভর্তি হয়েছে ১৩ হাজার ৮শ ৩১ জন। ঝরে পড়েছে ১৩ জন। ফুলগাজী উপজেলায় ১৪ হাজার ৫শ ২১ জন ভর্তি উপযোগী শিশু থাকলেও ভর্তি হয়েছে ১৪ হাজার ৫শ ৬ জন। ঝরে পড়েছে ১১ জন।
ফেনী জেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি এম. মামুনুর রশিদ বলেন, জেলায় ৩শ কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনাকালে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীও কমে গেছে। এছাড়া ঝরেপড়া ঠেকাতে সামাজিক নিরাপত্তার পাশাপাশি অভিভাবক ও স্কুল শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তার মত।
ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের আন্তরিক চেষ্টা আর অভিভাবকদের সচেতনতার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে ঝরে পড়া কমছে। ঝরে পড়া ধীরে ধীরে আরও কমে আসবে, হয়ত একটু সময় লাগবে।